🖤জীবনসঙ্গী🖤

আদর্শ পরিবার   

একজন ভালো জীবনসঙ্গী কে না চায়!  সবাই চায় একজন যোগ্য জীবনসঙ্গী।  আর সেই যোগ্য জীবনসঙ্গী খুঁজতে গিয়ে হই অবহেলিত, উপেক্ষিত।  যার জন্য দায়ী আমরা নিজেরাই। 

একজনকে ভালো লাগে। ভালো লাগে তার লেখা, কথা, ছবি।  যখন তাকে মেসেজ দিই, রিপ্লাই না দিলে কষ্ট পাই। মনে জমে অভিমান। বলি সে আমায় অবহেলা করছে। অনেক সময় নিজেই চোখ জলে বুক ভাসাই। আমি তার যোগ্য নই, তাই সে অবহেলা করছে। আমার মেসেজ সিন করে না। আমার প্রপোজ একসেপ্ট করে না। 

কখনও এমন হয়, ছেলেটা বা মেয়েটা অভিনয় শুরু করে। খেলতে থাকে আবেগ নিয়ে। অপর পক্ষ মনে করে হয়তো সে আমায় ভালোবাসা শুরু করেছে। আমার প্রপোজ একসেপ্ট করেছে। দিতে থাকে তার টাকা- পয়সা, সময়। এমনকি মূল্যবান সতীত্ব। অথচ অপর পক্ষ তাকে নিয়ে খেলছে। এমনও হয়, যার কাছে প্রতারিত হচ্ছে, সে একজন লেবাসধারি, মুখোশধারি, গায়ে মুড়ানো বোরকা, লম্বা পাঞ্জাবি। 

দোষটা কি শুধু তার একার? কখনও না। দোষটা আপনারও। আপনি এমন কয়েকটি ঘটনার স্বীকার হয়েছেন। আপনাকে কেউ আপন করতে চেয়েছে। কিন্তু আপনি এড়িয়ে গিয়েছেন। আপনি কারও আবেগ নিয়ে খেলতে চান না। তার চাওয়াটা পবিত্র সেখানে আপনি অভিনয় করে পবিত্র চাওয়াটা অপবিত্র করতে চাননি। কিন্তু এমন জায়গায় অন্য কেউ হলে ঠিকি সুযোগটা লুপে নিতো। লুপে নেয়। আপনি লুপে নেননি এজন্য অবশ্যই প্রতিদান পাবেন।

সবাই কি এক? তাই চাওয়াগুলোকে কারও কাছে প্রকাশ করে নিজেকে ছোট আর প্রতারিত না করে চাওয়াগুলো একান্ত মুনাজাতে বলে চলুন। দেখবেন চাওয়া মানুষটা থেকেও উত্তম কিছু পাবেন। 

চলুন এমন একটা ঘটনা বলি,

এক চোর  রাজার বাড়িতে চুরি করতে ঢুকে শুনতে পায় রাজা আর রাজকন্যার কথপোকথন।  সে রাজকন্যার রূপে মোহিত হয়ে পড়ে।  রাজকন্যা তার বাবাকে বলে, বাবা আমি এমন একজনকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে চাই, যিনি রাজ্যে সব থেকে ধার্মিক হবেন। 

সেই চোর ভাবলো, আমি এমন অফার কোনোভাবেই হাতছাড়া করব না।  সোজা চলে যায় মসজিদে, শুরু করতে থাকে মাওলার একান্ত ইবাদত।  চলতে থাকে বুজুর্গ হওয়ার আরাধনা।  সিক্ত হতে থাকে চোখের জলে মরুর মতো উষ্ণবুক।

কেটে গেছে অনেকদিন, রাজা তার মেয়ের জন্য পছন্দের ছেলে খুঁজে পাচ্ছেন না। এক কান দু কান করে সংবাদ চলে যায় সদ্য চুরি ছেড়ে আল্লাহর ওলি হতে চাওয়া লোকটির কথা। যে কিনা চুরি ছেড়ে আল্লাহর ইবাদত শুরু করেছে রাজকন্যাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য।

রাজা উপস্থিত পায়গাম নিয়ে সেই  চুরের দুয়ারে। যে চুর কিনা রাজকন্যাকে বিয়ের জন্য বেছে নিয়েছে এমন জীবন। কিন্তু সেই চুরের অভাক করা উত্তর, আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে পারব না।  রাজা বলেন, শুধু আমার কন্যা নয়, দিয়ে দেব  আমার ঘোটা রাজত্ব। কিন্তু সে ফিরিয়ে দেয়। বলে, আমি আল্লাহর যে নৈকট্য পেয়েছি। আল্লাহ আমাকে যে রাজত্ব দান করেছেন। তা আপনার রাজকন্যা আর রাজত্ব  থেকেও দামি। 

একটু ভাবুন!  যদি সেই চোর রাজকন্যাকে তখনই বিয়ের প্রস্তাব দিতো, কি পেতো?

অথচ সে যখন নিজেকে আল্লাহর ভালোবাসায় উৎসর্গ করল তখন সবকিছু চলে এলো তার হাতের মুঠোয়। 

ঠিক তেমন!  আজ নিজেকে কারও কাছে অবহেলিত না করে,  নিজেকে তৈরি করুন। নিজেকে আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করুন। দেখবেন যাকে চাচ্ছেন পেয়ে যাবেন তার থেকেও ভালো কিছু। সেদিন অভাক হয়ে বলবেন, এমন জিনিসের জন্য আমি পাগল হয়েছিলাম?

আর নিজেকে কারও কাছে ছোটো করবেন না। কারও মিথ্যে অভিনয়ের কাছে নিজের পবিত্র ভালোবাসা, নিজের সতীত্ব নষ্ট করবেন না। 

মনে রাখবেন সমাজে শয়তানরূপে হজুর -হুজুরানী বহুত আছে, যে আপনাকে নিয়ে যাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। 

ধৈর্য ধরুন। নিজেকে তৈরি করুন। আল্লাহর দরবারে একান্ত মুনাজাতে নিজের চাওয়াগুলো বলে চলুন। দেখবেন— কল্পনা থেকেও বেশি কিছু পাবেন। কারও সাথে মিথ্যা সম্পর্ক গড়তে গিয়ে পাপের সাগরে ডুব দিয়েন না।

ভালো লাগলে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিন সবার দুয়ারে

যদি একজনেরও নসিহা মিলে, তবে তো সফলতা।